জসিম উদ্দিন টিপু, টেকনাফ
প্রকাশিত: ১১/১১/২০২৫ ১১:২০ এএম

চলতি মৌসুমে টেকনাফে সুপারীর বাম্পার ফলন হয়েছে। অনুকুল আবহাওয়া ও সুষম সারের ব্যবহারের কারণে অন্য বছরের চেয়ে এবছর সুপারীর ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টি না হওয়ায় এবছর কৃষকরা উপযুক্ত সময়ে সুপারী সংগ্রহ করতে পেরেছেন। যথাপোযুক্ত সময়ে সুপারীর মূল্য পাওয়ায় কৃষকদের মাঝে বাড়তি আনন্দ দেখা দিয়েছে। টেকনাফের অর্থকরী ফসল;সুপারী চাষ থেকে কৃষকরা চলতি মৌসুমে অধিক টাকা পাওয়ায় অন্যান্য কৃষকরাও আগামী মৌসুম থেকে নতুন করে সুপারী চাষের কথা ভাবছেন বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।
কৃষি অফিস সুত্রে জানাগেছে, টেকনাফের সবরাং ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে সর্বোচ্চ সুপারীর চাষ করা হয়। এই ইউনিয়নে ৩শ ৭০হেক্টর জমিতে সুপারীর বাগান সৃজিত রয়েছে। পাশাপাশি উপজেলার বাহারছড়ায় ৩শ ৬০হেক্টর টেকনাফ সদরে ৩শ ৫০হেক্টর, হ্নীলাতে ৪০ হেক্টর, হোয়াইক্যংয়ে ৫০ হেক্টর ও প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনে ১০ হেক্টর জমিতে সুপারীর বাগান রয়েছে।
কৃষি বিভাগ জানায়,টেকনাফ উপজেলায় সৃজিত ১২শ ৮০হেক্টর বাগান থেকে ১০হাজার ২শ ৪০ মেট্রিক টন সুপারী উৎপাদন হয়েছে। যা অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশী। উৎপাদিত সুপারীর বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ১২কোটি টাকা বলে জানাগেছে। টেকনাফে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত সুপারী এখানকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। এমনকি বিদেশেও রপ্তানী হচ্ছে বলে সুপারী ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
সুপারী ৬মাসী অর্থকরি ফসল। বর্তমানে এই সুপারী বারো মাসি ফসল হিসেবেও পরিগণিত হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বারো মাসি সুপারী গাছ রয়েছে। ওই সুপারী গাছ রোপন করলেই বাণিজ্যিকভাবে বছরজুড়ে গাছ থেকে সুপারী সংগ্রহ করা যায়।
কৃষকরা জানায়, সাধারণত: জুন-জুলাই মাসে সুপারী গাছে মুকুল ধরে। আর অক্টোবর-নভেম্বর মাসে সুপারী পরিপক্ক হয়ে থাকে। পরবর্তীতে পরিপক্ক সুপারী কৃষকরা গাছ থেকে সংগ্রহ করেন। সংগ্রহের পর কেউ বাজারে বিক্রি করেন। কেউ বা বিশেষ পদ্ধতিতে বাসা-বাড়ীতে সংরক্ষণ করেন। এদিকে সংরক্ষিত সুপারীকে স্থানীয়রা ভিজা সুপারী বলে থাকেন। এই সুপারী অত্যন্ত মজা এবং চাহিদা সম্পন্ন। কাঁচা সুপারীর মতো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া না থাকায় ভিজা সুপারীর কদর একটু বেশী। অফ সিজনে তথা বর্ষা মৌসুমে ভিজা সুপারী অধিক মূল্যে বিক্রি করেন চাষী বা সংরক্ষণকারীরা।
কৃষকরা জানায়, টেকনাফে ভিজা সুপারী বিক্রি করে প্রতিবছর অনেকে বাড়তি টাকা আয় করেন। ভর মৌসুমে কিছু কিছু ব্যবসায়ী সুপারী কিনে বিশেষ পদ্ধতিতে তা সংরক্ষণ করে রাখেন। অফ সিজনে তারা সংরক্ষিত সুপারী চড়া দামে বিক্রি করে থাকেন। স্থানীয়দের অনেকে এভাবে সুপারী সংরক্ষণ করেই লাখ লাখ টাকা আয় করছেন বলে জানাগেছে।
উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: শফিউল আলম জানান, টেকনাফে ১২শ ৮০হেক্টর জমিতে সুপারী চাষ করা হয়েছে। তিনি আরো জানিয়েছেন, উল্লেখিত জমিতে সৃজিত বাগান থেকে চলতি মৌসুমে প্রায় ১০হাজার ২শ ৪০মেট্রিক টন সুপারী উৎপাদন হয়েছে।
মাঠ পর্যায়ে কর্মরত উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও চাষীদের মাঝে নিয়মিত সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কারণে সুপারীর বাম্পার ফলন হয়েছে জানিয়ে টেকনাফ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, সুপারীর ফলন বাড়াতে সার ব্যবস্থাপনা ও রোগবালাই সর্ম্পকে কৃষকদের হাতে কলমে মাঠে গিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আগামীতেও সুপারীর বাম্পার ফলন হবে এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়ে এই কৃষি কর্মকর্তা আরো বলেন,কৃষকদের মাঝে কারিগরী প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি কৃষকরাও যাতে ন্যায্য মূল্য পান সে বিষয়ে কৃষি বিভাগ কাজ করবেন বলে জানান।###

পাঠকের মতামত

উখিয়ায় ভাড়া বাসা থেকে অবৈধভাবে ক্যাম্পের বাইরে থাকা ১৮ রোহিঙ্গা আটক

কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানাধীন পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী মরা গাছতলা এলাকায় বিভিন্ন ভাড়া বাসায় বিশেষ অভিযান ...

কক্সবাজার-৪ : বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে কাফন-মশাল মিছিল

কক্সবাজার-৪ (উখিয়া–টেকনাফ) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার ...

উখিয়া টেকনাফে জামায়াতের জয় নিশ্চিত- মুহাম্মদ শাহজাহান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, উখিয়া-টেকনাফ আসনে জামায়াত ইনশাআল্লাহ জয়ী ...